সরলরেখা ও বক্ররেখা কাকে বলে

ভূমিকা

সুপ্রিয় পাঠক আজকাল অনেকেই অনলাইনে সরলরেখা ও বক্ররেখা কাকে বলে বিষয় নিয়ে জানতে চান। আজ আপনিও হয়তো অনেক খোঁজাখুঁজির পর নিশ্চয়ই সরলরেখা ও বক্ররেখা কাকে বলে কি তা জানার জন্যই আমাদের এই সাইটটিতে এসেছেন।
সরলরেখা ও বক্ররেখা কাকে বলেহ্যাঁ আজকে আমি সঠিকভাবে সরলরেখা ও বক্ররেখা কাকে বলে নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। চলুন এই লেখার মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ে ফেলি।

রেখা কাকে বলে

জ্যামিতিতে রেখা একটি মৌলিক ধারণা। রেখা হল একটি বিন্দুর চলার পথকে বোঝায় যার দৈর্ঘ্য অসীম এবং প্রস্থ বা বেধ নেই। অন্যভাবে বললে, রেখা হল একাধিক বিন্দুর অবিচ্ছিন্ন সংযোগ।
রেখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:
অসীম দৈর্ঘ্য: 
  • রেখার কোনো নির্দিষ্ট শেষ নেই, এটি দুইদিকে অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত।
শূন্য প্রস্থ ও বেধ: 
  • রেখার কোনো পুরুত্ব নেই, এটি কেবল একটি মাত্র মাত্রায় বিস্তৃত।
সরল বা বক্র: 
  • রেখা দুই প্রকারের হতে পারে - সরল এবং বক্র। সরল রেখা সর্বত্র একই দিকে চলে এবং বক্র রেখা বিভিন্ন দিকে বাঁকতে পারে।

সরল রেখা কাকে বলে

সরল রেখা হল এমন একটি রেখা যা এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে যেতে কোনো দিক পরিবর্তন করে না। অর্থাৎ, এটি সর্বদা একই দিকে সোজাভাবে চলতে থাকে।
উদাহরণ:
  • একটি পেন্সিল দিয়ে কাগজে টানা সোজা লাইন
  • রাস্তার পাশের ফুটপাতের বরাবর টানা সোজা লাইন
  • একটি দড়ির সোজা অংশ
সরল রেখার বৈশিষ্ট্য:
  • দৈর্ঘ্য অসীম: সরল রেখার কোনো শেষ নেই। এটি দুইদিকে অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।
  • প্রস্থ শূন্য: সরল রেখার কোনো মোটা অংশ নেই। এটি অত্যন্ত পাতলা।
  • একই দিকে চলমান: সরল রেখা সর্বদা একই দিকে চলতে থাকে। এতে কোনো বাঁক বা বক্রতা থাকে না।
সরল রেখার প্রতীক:
গণিতে সরল রেখাকে সাধারণত একটি ছোট অক্ষর দিয়ে প্রকাশ করা হয়, যেমন: l, m, n ইত্যাদি।
সরল রেখার ব্যবহার:
  • জ্যামিতি: ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, আয়তক্ষেত্র ইত্যাদি জ্যামিতিক আকার তৈরিতে সরল রেখা ব্যবহৃত হয়।
  • গ্রাফ: বিভিন্ন তথ্যকে দৃশ্যমান করার জন্য গ্রাফ আঁকা হয়, যেখানে সরল রেখার সাহায্যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
  • চিত্রকলা: চিত্রকলার বিভিন্ন শৈলীতে সরল রেখার ব্যবহার করা হয়।
সরল রেখা সম্পর্কিত আরও কিছু ধারণা:
রেখাংশ: সরল রেখার কোনো নির্দিষ্ট দুটি বিন্দুর মধ্যবর্তী অংশকে রেখাংশ বলে।
রশ্মি: সরল রেখার একটি প্রান্তবিন্দু থাকে এবং অন্য দিকে অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।

সরলরেখা ও বক্ররেখা কাকে বলে

সরলরেখা ও বক্ররেখা: একটি সহজ ব্যাখ্যা
জ্যামিতিতে রেখা দুই প্রকারের হয়ে থাকে: সরলরেখা এবং বক্ররেখা।
সরলরেখা
সরলরেখা হল এমন একটি রেখা যা কোনো বাঁক ছাড়া সোজাভাবে দুই দিকে অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এটি এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে যাওয়ার সবচেয়ে ছোট পথ।
উদাহরণ: একটি পেন্সিল দিয়ে কাগজে টানা সোজা লাইন, রাস্তার পাশের ফুটপাতের বরাবর টানা লাইন।
বক্ররেখা
বক্ররেখা হল এমন একটি রেখা যা সর্বত্র একই দিকে না চলে, বরং কোনো না কোনোভাবে বাঁকানো থাকে।
উদাহরণ: একটি বৃত্তের পরিধি, একটি তরঙ্গরেখা।

সরলরেখা ও বক্ররেখার মধ্যে পার্থক্য

সারণি:

বৈশিষ্ট্য

সরলরেখা

বক্ররেখা

আকার

সোজা

বাঁকা

দিক

একই দিকে চলে

বিভিন্ন দিকে চলে

বক্রতা

শূন্য

শূন্যের থেকে বেশি

উদাহরণ

পেন্সিল দিয়ে টানা সোজা লাইন, রাস্তার পাশের ফুটপাত

বৃত্তের পরিধি, তরঙ্গরেখা

সংখ্যা রেখা কাকে বলে

সংখ্যা রেখা কাকে বলে?
সংখ্যারেখা হল একটি সরল রেখা যার উপর সমস্ত বাস্তব সংখ্যাকে একটি নির্দিষ্ট ক্রমে সাজানো হয়। এই রেখার একটি নির্দিষ্ট বিন্দুকে শূন্য (0) ধরে ডান দিকে ধনাত্মক সংখ্যা এবং বাম দিকে ঋণাত্মক সংখ্যা স্থাপন করা হয়। সংখ্যারেখার প্রতিটি বিন্দু একটি নির্দিষ্ট সংখ্যাকে প্রকাশ করে।
সংখ্যারেখার গুরুত্ব:
  • সংখ্যা তুলনা: সংখ্যারেখা ব্যবহার করে আমরা দুটি সংখ্যার মধ্যে কোনটি বড় এবং কোনটি ছোট তা সহজেই বুঝতে পারি। ডান দিকে থাকা সংখ্যাটি বাম দিকে থাকা সংখ্যার চেয়ে বড়।
  • গাণিতিক ক্রিয়া: যোগ, বিয়োগ, গুণ এবং ভাগের মতো গাণিতিক ক্রিয়াকে সংখ্যারেখার সাহায্যে দৃশ্যমান করা যায়।
  • পরিমাপ: দৈর্ঘ্য, ওজন, সময় ইত্যাদি পরিমাপ করার জন্য সংখ্যারেখা ব্যবহৃত হয়।
সংখ্যারেখা কীভাবে তৈরি করা হয়:
একটি সরল রেখা আঁকুন: 
  • একটি কাগজে একটি সরল রেখা আঁকুন।
শূন্য বিন্দু নির্ধারণ করুন: 
  • রেখার যে কোনো একটি বিন্দুকে শূন্য (0) ধরুন।
একক দূরত্ব নির্ধারণ করুন: 
  • শূন্য থেকে ডান দিকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে একটি বিন্দু নির্ধারণ করুন এবং সেটিকে 1 দ্বারা চিহ্নিত করুন। এই দূরত্বকে একক দূরত্ব বলা হয়।
ধনাত্মক সংখ্যা স্থাপন করুন: 
  • একক দূরত্বের সমান দূরত্বে ডান দিকে পরপর বিন্দু নির্ধারণ করে 2, 3, 4 ইত্যাদি ধনাত্মক সংখ্যা স্থাপন করুন।
ঋণাত্মক সংখ্যা স্থাপন করুন: 
  • শূন্য থেকে বাম দিকে একক দূরত্বের সমান দূরত্বে পরপর বিন্দু নির্ধারণ করে -1, -2, -3 ইত্যাদি ঋণাত্মক সংখ্যা স্থাপন করুন।

রেখা ও রেখাংশ কাকে বলে

জ্যামিতিতে রেখা ও রেখাংশ দুটি খুবই মৌলিক ধারণা। আসুন দেখি এই দুটো কী এবং এদের মধ্যে পার্থক্য কী।
রেখা কাকে বলে?
রেখা হল এমন একটি বিন্দুর চলার পথ যার কোনো শুরু বা শেষ নেই। এটি দুইদিকে অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত।
উদাহরণ: একটি সোজা রাস্তা, একটি দড়ির সোজা অংশ।
রেখাংশ কাকে বলে?
রেখাংশ হল রেখার একটি নির্দিষ্ট অংশ। এর একটি নির্দিষ্ট শুরু এবং একটি নির্দিষ্ট শেষ থাকে।
উদাহরণ: একটি পেন্সিল দিয়ে কাগজে টানা একটি ছোট সোজা লাইন, একটি দড়ির একটি নির্দিষ্ট অংশ।

রেখা ও রেখাংশের মধ্যে পার্থক্য

বৈশিষ্ট্য

রেখা

রেখাংশ

শুরু এবং শেষ

কোনো শুরু বা শেষ নেই

একটি নির্দিষ্ট শুরু এবং একটি নির্দিষ্ট শেষ থাকে

দৈর্ঘ্য

অসীম

নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য

চিহ্নিতকরণ

দুটি তীরচিহ্ন দিয়ে চিহ্নিত করা হয়

দুটি বিন্দু দিয়ে চিহ্নিত করা হয়

সমান্তরাল রেখা কাকে বলে

সমান্তরাল রেখা হল এমন দুটি বা ততোধিক সরলরেখা যা একই সমতলে অবস্থিত এবং পরস্পরকে কখনো ছেদ করে না। অর্থাৎ, এই রেখাগুলি সর্বদা সমান দূরত্বে থাকে।
সমান্তরাল রেখার বৈশিষ্ট্য:
  • একই সমতলে থাকে: সমান্তরাল রেখাগুলি সবসময় একই সমতলে অবস্থান করে।
  • পরস্পরকে ছেদ করে না: এই রেখাগুলি কোনো বিন্দুতে পরস্পরকে ছেদ করে না।
  • সর্বদা সমান দূরত্বে থাকে: সমান্তরাল রেখাগুলির মধ্যবর্তী দূরত্ব সর্বত্র সমান থাকে।
উদাহরণ:
  • রেললাইনের দুটি রেললাইন
  • নোটবুকের পাতার দুটি বিপরীত বাহু
  • একটি আয়তক্ষেত্রের বিপরীত বাহু

উপসংহার

প্রিয় পাঠক আজ সরলরেখা ও বক্ররেখা কাকে বলে নিয়ে আলোচনা করলাম। আগামীতে অন্য কোনো ভালো বিষয় নিয়ে হাজির হবো। আশা করছি উপরের সরলরেখা ও বক্ররেখা কাকে বলে বিষয়ে আলোচনা আপনার ভালো লেগেছে। যদি এ বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানান আর এই কনটেন্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। আমাদের ফলো করে সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জমজম আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url