সন্নিহিত কোণ কাকে বলে

ভূমিকা

সুপ্রিয় পাঠক আজকাল অনেকেই অনলাইনে সন্নিহিত কোণ কাকে বলে, কোণ কাকে বলে এ বিষয় নিয়ে জানতে চান। আজ আপনিও হয়তো অনেক খোঁজাখুঁজির পর নিশ্চয়ই সন্নিহিত কোণ কাকে বলে, কোণ কাকে বলে  তা জানার জন্যই আমাদের এই সাইটটিতে এসেছেন।
সন্নিহিত কোণ কাকে বলে
হ্যাঁ আজকে আমি সঠিকভাবে সন্নিহিত কোণ কাকে বলে, কোণ কাকে বলে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। চলুন এই লেখার মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ে ফেলি।

কোণ কাকে বলে

কোণ কাকে বলে
কোণ হল দুটি রশ্মির এমন একটি মিলনবিন্দু যেখানে তারা একটি শীর্ষবিন্দু তৈরি করে। এই দুটি রশ্মির মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গাকেই আমরা কোণ বলি।
আরেকভাবে বলতে গেলে: 
  • যেখানে দুটি রশ্মি বা সরলরেখা একটি সাধারণ বিন্দুতে মিলিত হয়, সেই বিন্দুকে কেন্দ্র করে যে স্থান তৈরি হয়, তাকে কোণ (Angle) বলে। এই সাধারণ বিন্দুটিকে শীর্ষবিন্দু (Vertex) বলা হয় এবং রেখাদুটিকে বাহু (Arms) বলা হয়। 

সন্নিহিত কোণ কাকে বলে

সন্নিহিত কোণ হল এমন দুটি কোণ যাদের:
  • একই শীর্ষবিন্দু থাকে।
  • একটি সাধারণ বাহু থাকে।
  • সাধারণ বাহুর বিপরীত দিকে অবস্থান করে।
সহজ কথায় বলতে গেলে, দুটি কোণ একই জায়গায় মিলিত হয়েছে এবং একটি সাধারণ বাহুকে শেয়ার করে থাকলে তাদেরকে সন্নিহিত কোণ বলে।
উদাহরণ:
  • একটি সরলরেখাকে অন্য একটি রেখা দিয়ে ছেদ করলে যে দুটি কোণ তৈরি হয়, সেগুলো সন্নিহিত কোণ।
  • একটি ঘড়ির কাঁটার মধ্যবর্তী কোণ দুটিও সন্নিহিত কোণ।

পূরক কোণ কাকে বলে

পূরক কোণ হল এমন দুটি কোণ যাদের যোগফল ৯০ ডিগ্রি বা এক সমকোণ হয়। অর্থাৎ, যদি দুটি কোণের মাপ যোগ করে ৯০ ডিগ্রি হয়, তাহলে সেই দুটি কোণকে পরস্পরের পূরক কোণ বলে।
উদাহরণ:
  • ৩০ ডিগ্রি এবং ৬০ ডিগ্রি দুটি পূরক কোণ। কারণ, ৩০ ডিগ্রি + ৬০ ডিগ্রি = ৯০ ডিগ্রি।
  • ৪৫ ডিগ্রি এবং ৪৫ ডিগ্রি দুটি পূরক কোণ। কারণ, ৪৫ ডিগ্রি + ৪৫ ডিগ্রি = ৯০ ডিগ্রি।

বিপ্রতীপ কোণ কাকে বলে

বিপ্রতীপ কোণ হল এমন দুটি কোণ যাদের:
  • একই শীর্ষবিন্দু থাকে।
  • একটি রেখার বিপরীত দিকে অবস্থান করে।
সহজ কথায় বলতে গেলে, যখন দুটি সরলরেখা পরস্পরকে ছেদ করে, তখন ছেদবিন্দুতে চারটি কোণ তৈরি হয়। এই চারটি কোণের মধ্যে যে দুটি কোণ একে অপরের বিপরীত দিকে অবস্থান করে, সেগুলোকে বিপ্রতীপ কোণ বলে।

সূক্ষ্মকোণ কাকে বলে

সূক্ষ্মকোণ হল এমন একটি কোণ যার মাপ ৯০ ডিগ্রি অপেক্ষা কম। অর্থাৎ, যদি কোনো কোণের মাপ ০ ডিগ্রি এবং ৯০ ডিগ্রির মধ্যে হয়, তাহলে সেই কোণকে সূক্ষ্মকোণ বলা হয়।
উদাহরণ:
  • ঘড়ির কাঁটা যখন ১ টা বা ২ টা দেখায়, তখন কাঁটা দুটির মধ্যে যে কোণ তৈরি হয়, তা একটি সূক্ষ্মকোণ।
  • একটি ত্রিভুজের তিনটি কোণের মধ্যে যে কোনো একটি কোণ সূক্ষ্মকোণ হতে পারে।
সূক্ষ্মকোণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:
  • সূক্ষ্মকোণের মাপ সবসময় ধনাত্মক হয়।
  • সূক্ষ্মকোণকে একটি সমকোণের অংশ হিসেবেও দেখা যেতে পারে।
  • সূক্ষ্মকোণের বিপরীত কোণও সূক্ষ্মকোণ হবে।

সম্পূরক কোণ কাকে বলে

সম্পূরক কোণ হল এমন দুটি কোণ যাদের যোগফল ১৮০ ডিগ্রি বা এক সরলকোণ হয়। অর্থাৎ, যদি দুটি কোণকে একসাথে রাখলে তারা মিলে একটা সরল রেখা তৈরি করে, তাহলে সেই দুটি কোণকে সম্পূরক কোণ বলে।
সহজ কথায় বলতে গেলে, যে দুটি কোণের যোগফল ১৮০° হয়, তাদেরকে পরস্পরের সম্পূরক কোণ বলা হয়। অর্থাৎ, দুটি কোণের সমষ্টি যদি ১৮০° হয়, তবে একে অপরের সম্পূরক কোণ হিসেবে বিবেচিত হয়। 
উদাহরণ:
  • ৬০ ডিগ্রি এবং ১২০ ডিগ্রি কোণ দুটি সম্পূরক কোণ, কারণ ৬০ + ১২০ = ১৮০।
  • একটি সরলরেখাকে অন্য একটি রেখা দিয়ে ছেদ করলে যে দুটি কোণ তৈরি হয়, সেগুলো পরস্পরের সম্পূরক কোণ।

একান্তর কোণ কাকে বলে

একান্তর কোণ হল এমন দুটি কোণ যাদের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই বৈশিষ্ট্যগুলি বুঝতে হলে আমাদের দুটি সমান্তরাল রেখা এবং একটি ছেদক রেখার কথা ভাবতে হবে।



চিত্র: একান্তর কোণ
সংজ্ঞা:
দুটি সমান্তরাল রেখাকে যখন একটি তির্যক রেখা ছেদ করে, তখন ছেদক রেখার বিপরীত দিকে সমান্তরাল রেখা দুটির মধ্যে যে কোণগুলি তৈরি হয়, সেগুলিকে একান্তর কোণ বলে।
বিভিন্ন ধরনের একান্তর কোণ:
  • অন্তঃস্থ একান্তর কোণ: সমান্তরাল রেখা দুটির মধ্যবর্তী অংশে যে দুটি একান্তর কোণ তৈরি হয়, সেগুলিকে অন্তঃস্থ একান্তর কোণ বলে।
  • বহিঃস্থ একান্তর কোণ: সমান্তরাল রেখা দুটির বাইরে যে দুটি একান্তর কোণ তৈরি হয়, সেগুলিকে বহিঃস্থ একান্তর কোণ বলে।
একান্তর কোণের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:
  • একান্তর কোণগুলি পরস্পর সমান হয়।

অনুরূপ কোণ কাকে বলে

অনুরূপ কোণ হল এমন দুটি কোণ যাদের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই বৈশিষ্ট্যগুলি বুঝতে হলে আমাদের দুটি সমান্তরাল রেখা এবং একটি ছেদক রেখার কথা ভাবতে হবে।



চিত্র:অনুরূপ কোণ
সংজ্ঞা:
দুটি সমান্তরাল রেখাকে যখন একটি তির্যক রেখা ছেদ করে, তখন একই দিকে অবস্থিত এবং সমান্তরাল রেখা দুটির একই পাশে অবস্থিত যে কোণগুলি তৈরি হয়, সেগুলিকে অনুরূপ কোণ বলে।
বিভিন্ন ধরনের অনুরূপ কোণ:
  • অন্তঃস্থ অনুরূপ কোণ: সমান্তরাল রেখা দুটির মধ্যবর্তী অংশে যে দুটি অনুরূপ কোণ তৈরি হয়, সেগুলিকে অন্তঃস্থ অনুরূপ কোণ বলে।
  • বহিঃস্থ অনুরূপ কোণ: সমান্তরাল রেখা দুটির বাইরে যে দুটি অনুরূপ কোণ তৈরি হয়, সেগুলিকে বহিঃস্থ অনুরূপ কোণ বলে।
একান্তর কোণের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:
  • অনুরূপ কোণগুলি পরস্পর সমান হয়।

প্রবৃদ্ধ কোণ কাকে বলে

প্রবৃদ্ধ কোণ হল এমন একটি কোণ যেটি এক সরলকোণ (১৮০ ডিগ্রি) অপেক্ষা বড় কিন্তু দুই সরলকোণ (৩৬০ ডিগ্রি) অপেক্ষা ছোট। সহজ কথায় বলতে গেলে, যখন দুটি রেখা একে অপরকে অতিক্রম করে এবং তাদের মধ্যে তৈরি কোণ ১৮০ ডিগ্রি অপেক্ষা বেশি হয়, তখন তাকে প্রবৃদ্ধ কোণ বলা হয়।
উদাহরণ:
  • একটি ঘড়ির কাঁটা যখন ১২ টা থেকে ৩ টার দিকে যায়, তখন তারা যে কোণ তৈরি করে, তা একটি প্রবৃদ্ধ কোণ।
  • একটি দরজা যখন সম্পূর্ণ খোলা থাকে, তখন দরজার দুই পাশের মধ্যে যে কোণ তৈরি হয়, তাও একটি প্রবৃদ্ধ কোণ।
প্রবৃদ্ধ কোণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:
  • প্রবৃদ্ধ কোণের মাপ সবসময় ১৮০ ডিগ্রি থেকে ৩৬০ ডিগ্রির মধ্যে হয়।
  • প্রবৃদ্ধ কোণকে একটি পূর্ণ কোণের অংশ হিসেবেও দেখা যেতে পারে।
  • প্রবৃদ্ধ কোণের বিপরীত কোণও একটি প্রবৃদ্ধ কোণ হবে।

অন্তঃস্থ কোণ কাকে বলে

অন্তঃস্থ কোণ হল কোনো বহুভুজের ভেতরে অবস্থিত একটি কোণ। সহজ কথায় বললে, যখন কোনো বহুভুজের দুটি বাহু মিলিত হয়, তখন তাদের মধ্যে যে কোণ তৈরি হয়, তাকেই অন্তঃস্থ কোণ বলে।

চিত্র:অন্তঃস্থ কোণ
উদাহরণ:
  • একটি ত্রিভুজের তিনটি কোণ সবই অন্তঃস্থ কোণ।
  • একটি চতুর্ভুজের চারটি কোণ সবই অন্তঃস্থ কোণ।
অন্তঃস্থ কোণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:
  • একটি বহুভুজের প্রতিটি শীর্ষবিন্দুতে একটি করে অন্তঃস্থ কোণ থাকে।
  • একটি উত্তল বহুভুজের সকল অন্তঃস্থ কোণের মান ১৮০ ডিগ্রি অপেক্ষা কম হয়।
  • একটি বহুভুজের সকল অন্তঃস্থ কোণের যোগফল একটি নির্দিষ্ট সূত্রের মাধ্যমে নির্ণয় করা যায়।

কোণ কাকে বলে ২য় শ্রেণি

কোণ কাকে বলে? (২য় শ্রেণির জন্য)
কোণ কি?
কোণ হল দুটি রেখা যখন একই বিন্দুতে মিলিত হয়, তখন তাদের মধ্যে যে ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়, তাকেই কোণ বলে।

চিত্র: কোণ
কোণকে কীভাবে চিনব?
কোণকে একটি খোলা বইয়ের মতো ভাবতে পার। যেমন, তোমার হাতের পাম দুটি যখন মিলিত হয়, তখন তাদের মধ্যে যে ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়, তা একটি কোণ।
কোণের প্রকারভেদ:
সব কোণ একই রকম হয় না। কোণের আকার অনুযায়ী তাদের বিভিন্ন নাম দেওয়া হয়।
  • সূক্ষ্মকোণ: যখন দুটি রেখার মধ্যে ফাঁকা জায়গা খুব ছোট হয়, তখন তাকে সূক্ষ্মকোণ বলে।

চিত্র: সূক্ষ্মকোণ
  • সমকোণ: যখন দুটি রেখা একে অপরকে ঠিক ৯০ ডিগ্রি কোণে ছেদ করে, তখন তাকে সমকোণ বলে।

চিত্র: সমকোণ
স্থূলকোণ: যখন দুটি রেখার মধ্যে ফাঁকা জায়গা বেশি হয়, কিন্তু এক সরল রেখার চেয়ে কম হয়, তখন তাকে স্থূলকোণ বলে।
চিত্র: স্থূলকোণ
কোণের ব্যবহার:
আমরা আমাদের চারপাশে অনেক জায়গায় কোণ দেখতে পাই। যেমন:
  • ঘরের কোণ
  • বইয়ের কোণ
  • টেবিলের কোণ

উপসংহার

প্রিয় পাঠক আজ সন্নিহিত কোণ কাকে বলে, কোণ কাকে বলে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম। আগামীতে অন্য কোনো ভালো বিষয় নিয়ে হাজির হবো। আশা করছি উপরের সন্নিহিত কোণ কাকে বলে, কোণ কাকে বলে এ বিষয়ে আলোচনা আপনার ভালো লেগেছে। যদি এ বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানান আর এই কনটেন্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। আমাদের ফলো করে সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জমজম আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url