ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত
ভূমিকা
আসসালামু আলাইকুম । প্রিয় পাঠক জমজম আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। আপনি অনেক
খোঁজাখুজির পর নিশ্চয়ই ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত বা ডায়রিয়া কেন হয় বা
ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায় কি তা জানার জন্যই আমাদের এই সাইটটিতে
এসেছেন।
হ্যাঁ আজকে আমি সঠিকভাবে ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত বা ডায়রিয়া কেন হয় বা
ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায় কি তা নিয়ে আলোচনা করব। এই লেখার মূল
বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ে ফেলুন।
ডায়রিয়া কি
ডায়রিয়া হলো পায়খানার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তরল বা পাতলা হওয়া। সাধারণত ২৪
ঘন্টার মধ্যে ৩ বার বা তার বেশি বার পাতলা পায়খানা হলে তাকে ডায়রিয়া
বলে।ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর
হতে পারে, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে। তাই ডায়রিয়া হলে প্রচুর পরিমাণে তরল পান
করা জরুরি।
ডায়রিয়ার কারণ
বিভিন্ন কারণে ডাইরিয়া হতে পারে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো
ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত বা ডায়রিয়া কেন হয় বা ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও
প্রতিকারের উপায় কি তা আলোচনা করা হলো।
- ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, বা পরজীবী দ্বারা সংক্রমণ
- খাদ্যে বিষক্রিয়া
- অন্ত্রের প্রদাহ বা আলসার
- নির্দিষ্ট ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- গুরুতর অসুস্থতা, যেমন টাইফয়েড, আমাশয়, বা কলেরা
ডায়রিয়া কেন হয়
ডায়রিয়া হলো অন্ত্রের মাধ্যমে অতিরিক্ত তরল পায়খানার নির্গমন। ডায়রিয়া কেন হয়
বা ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকার সাধারণত ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৩ বার বা তার বেশি বার
পাতলা পায়খানা হলে তাকে ডায়রিয়া বলে। ডায়রিয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে, যার
মধ্যে রয়েছে:
সংক্রামক রোগ: ডায়রিয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো সংক্রামক রোগ।
ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, বা পরজীবী দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণগুলি অন্ত্রের আস্তরণকে
ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং ডায়রিয়া হতে পারে।
যেসব কারণে সংক্রামক ডায়রিয়া হতে পারে তার কিছু সাধারণ কারণ হলো:
- ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ, যেমন ই. কোলাই, সালমোনেলা, বা শিগেলা
- ভাইরাসজনিত সংক্রমণ, যেমন নর্ওয়েজিয়ান নোরোভাইরাস বা রয়্যাল ফার্ম ভাইরাস
- পরজীবী সংক্রমণ, যেমন অ্যামিবা বা জিয়ারিয়া
অ্যালকোহল বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু অ্যালকোহল এবং ওষুধের
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে ডায়রিয়া হতে পারে।
অন্ত্রের সমস্যা: অন্ত্রের কিছু সমস্যা যেমন ক্রোনস ডিজিজ, আলসারেটিভ
কোলাইটিস, বা ডাইভার্টিকুলাইটিস ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে। অন্ত্রের সমস্যা
হলেও ডায়রিয়া হতে পারে।
পাকস্থলীর সমস্যা: পাকস্থলীর কিছু সমস্যা যেমন গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস বা
গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD) ডায়রিয়ার কারণ হতে
পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনার পাকস্থলীর সমস্যার কারণে হতে পারে।
অন্যান্য কারণ: অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে অ্যালার্জি, খাদ্য
অসহিষ্ণুতা, এবং মানসিক চাপ।
ডায়রিয়ার লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- পাতলা বা জলযুক্ত পায়খানা
- দিনে ৩ বার বা তার বেশি বার পায়খানা
- পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি
- বমি
- জ্বর
- দুর্বলতা
ডায়রিয়া সাধারণত গুরুতর নয় এবং কয়েক দিনের মধ্যে নিজেই সেরে যায়। তবে,
ডায়রিয়া গুরুতর হতে পারে যদি এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়, অথবা যদি এটি পানিশূন্যতার
কারণ হয়।
- ডায়রিয়ার চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে: ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকার
- প্রচুর পরিমাণে তরল পান করা, যা পানিশূন্যতা রোধে সাহায্য করবে।
- খাবার স্যালাইন, যা পানি এবং লবণের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করবে।
- ওষুধ, যা ডায়রিয়া কমাতে সাহায্য করতে পারে।
ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ কি কি
ডায়রিয়া হলো অন্ত্রের মাধ্যমে অতিরিক্ত তরল পায়খানার নির্গমন। সাধারণত ২৪
ঘন্টার মধ্যে ৩ বার বা তার বেশি বার পাতলা পায়খানা হলে তাকে ডায়রিয়া বলে।
ডায়রিয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:
সংক্রামক রোগ:
- ডায়রিয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো সংক্রামক রোগ। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, বা পরজীবী দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণগুলি অন্ত্রের আস্তরণকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং ডায়রিয়া হতে পারে।
সংক্রামক ডায়রিয়ার কিছু সাধারণ কারণ হলো:
- ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ, যেমন ই. কোলাই, সালমোনেলা, বা শিগেলা
- ভাইরাসজনিত সংক্রমণ, যেমন নর্ওয়েজিয়ান নোরোভাইরাস বা রয়্যাল ফার্ম ভাইরাস
- পরজীবী সংক্রমণ, যেমন অ্যামিবা বা জিয়ারিয়া
অ্যালকোহল বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু অ্যালকোহল এবং ওষুধের
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে ডায়রিয়া হতে পারে।
- প্রচুর পরিমাণে তরল পান করা, যা পানিশূন্যতা রোধে সাহায্য করবে।
- খাবার স্যালাইন, যা পানি এবং লবণের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করবে।
- ওষুধ, যা ডায়রিয়া কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- ডায়রিয়া প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে:
- সুপেয় পানি পান করা।
- খাবার ভালভাবে রান্না করা।
- ফল এবং শাকসবজি ধুয়ে খাওয়া।
- ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
- ভ্রমণের সময় স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পানীয় গ্রহণ করা।
ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত
ডায়রিয়া হলে প্রচুর পরিমাণে তরল পান করা এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি।
পানিশূন্যতা রোধ করতে এবং শরীরের শক্তি ধরে রাখতে এই পদক্ষেপগুলি সাহায্য করবে।
ডায়রিয়া হলে খাওয়া উচিত এমন খাবারের মধ্যে রয়েছে:
তরল খাবার:
- ডায়রিয়া হলে প্রচুর পরিমাণে তরল পান করা জরুরি। পানি, ডাবের পানি, চিড়ার পানি, ভাতের মাড়, এবং ফলের রস সবই খাওয়া উচিত।
শর্করা সমৃদ্ধ খাবার:
- শর্করা শরীরের শক্তির জন্য প্রয়োজনীয়। ডায়রিয়া হলে চিনি, ফল, এবং ময়দাযুক্ত খাবার খাওয়া যেতে পারে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার:
- প্রোটিন শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলি মেরামত করতে সাহায্য করে। ডায়রিয়া হলে মাছ, মাংস, এবং ডিম খাওয়া যেতে পারে।
আঁশযুক্ত খাবার:
- আঁশযুক্ত খাবার অন্ত্রের মধ্য দিয়ে দ্রুত চলে যায় এবং ডায়রিয়াকে আরও খারাপ করতে পারে। ডায়রিয়া হলে কাঁচা সবজি, ফলের খোসা, এবং পুরো শস্য এড়িয়ে চলা উচিত।
ফ্যাটযুক্ত খাবার:
- ফ্যাটযুক্ত খাবার হজম করা কঠিন হতে পারে এবং ডায়রিয়াকে আরও খারাপ করতে পারে। ডায়রিয়া হলে তেল, মাখন, এবং ক্রিমের মতো ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
মশলাযুক্ত খাবার:
- মশলাযুক্ত খাবার অন্ত্রের প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে এবং ডায়রিয়াকে আরও খারাপ করতে পারে। ডায়রিয়া হলে মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
কফি এবং অ্যালকোহল:
- কফি এবং অ্যালকোহল পানি শোষণকে বাধা দেয় এবং পানিশূন্যতাকে আরও খারাপ করতে পারে। ডায়রিয়া হলে কফি এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা উচিত।
শিশুর ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত
শিশুর ডায়রিয়া হলে, তাদের পানিশূন্যতা রোধ করা এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো
গুরুত্বপূর্ণ।
তরল খাবার: শিশুর ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত
ওআরএস (ORS):
ডায়রিয়ার চিকিৎসার জন্য ওআরএস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবার পাতলা
পায়খানার পর শিশুর বয়স অনুযায়ী ওআরএস খাওয়ান।
পানি:
- শিশুর ডায়রিয়া হলে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়ান।
স্যুপ:
- শিশুর ডায়রিয়া হলে মুরগির স্যুপ, মাছের স্যুপ, শাকসবজির স্যুপ।
- চিড়ার পানি:শিশুর ডায়রিয়া হলে প্রচুর পরিমানে চিড়ার পানি খাওয়ান।
- ডাবের পানি:শিশুর ডায়রিয়া হলে প্রচুর পরিমানে ডাবের পানি খাওয়ান।
- নারকেলের পানি:শিশুর ডায়রিয়া হলে প্রচুর পরিমানে ডাবের পানি খাওয়ান।
- ফলের রস: শিশুর ডায়রিয়া হলে প্রচুর পরিমানে ফলের রস খাওয়ান।
- খাবার:শিশুর ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত
- ভাতের মাড়:
- মাড় দিয়ে তৈরি খাবার:
- পেঁপে:
- কাঁচা কলা:
- সবজি:
- মাছ:
- ডিম:
- দই:
মুরগির মাংস:
যা খাওয়ানো উচিত নয়: শিশুর ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত
- চর্বিযুক্ত খাবার:
- মশলাযুক্ত খাবার:
- আঁশযুক্ত খাবার:
- কাঁচা খাবার:
- ঠান্ডা পানীয়:
- ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়:
বাজারে বিক্রি হওয়া প্রক্রিয়াজাত খাবার:
- শিশুর খাবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে তৈরি করুন।
- খাবার হালকা এবং সহজপাচ্য হওয়া উচিত।
- শিশুকে অল্প অল্প করে ঘন ঘন খাওয়ান।
- শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করবেন না।
- ডায়রিয়া যদি তীব্র হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
- ডায়রিয়ার কারণে শিশুর শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়।
- পানিশূন্যতা শিশুর জন্য মারাত্মক হতে পারে।
- ডায়রিয়ার সময় শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো গুরুত্বপূর্ণ।
- চিকিৎসার জন্য ওআরএস খুবই কার্যকর।
ডায়রিয়া যদি তীব্র হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে
যোগাযোগ করুন।
ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকার
- ছোট ছোট খাবার বারে খান। একবারে বেশি খাবার খেলে আপনার পেট খারাপ হতে পারে।
- খাবার ভালো করে চিবিয়ে খান। খাবার ভালো করে চিবিয়ে খেলে হজম করা সহজ হয়।
- খাবার গরম করে খান। ঠান্ডা খাবার হজম করা কঠিন হতে পারে।
ডায়রিয়া সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে নিজেই সেরে যায়। তবে, যদি আপনার ডায়রিয়া
দীর্ঘস্থায়ী হয়, বা যদি এটি পানিশূন্যতা বা অন্যান্য জটিলতা সৃষ্টি করে, তাহলে
আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকার
সুপেয় পানি পান করা:
ডায়রিয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো দূষিত পানি। সুতরাং, সুপেয় পানি পান করা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত বা ডায়রিয়া কেন হয় বা
ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায় কি তা নিয়ে কথা হলো।
খাবার ভালভাবে রান্না করা:
- খাবার ভালভাবে রান্না করলে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, এবং পরজীবীগুলি মারা যায়।
ফল এবং শাকসবজি ধুয়ে খাওয়া:
- ফল এবং শাকসবজি ধুয়ে খাওয়ার আগে সাবানের জলে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা:
- হাত ধোয়া হলো ডায়রিয়া প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। খাওয়ার আগে, পায়খানা করার পরে, এবং শিশুকে পরিচর্যা করার পরে হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
ভ্রমণের সময় স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পানীয় গ্রহণ করা:
- ভ্রমণের সময় বাইরের খাবার এবং পানীয় খাওয়া এড়িয়ে চলুন। যদি আপনি বাইরের খাবার খান, তাহলে তা ভালভাবে রান্না করা এবং গরম থাকা উচিত।
ডায়রিয়ার প্রতিকার
ডায়রিয়া হলে প্রচুর পরিমাণে তরল পান করা এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি।
পানিশূন্যতা রোধ করতে এবং শরীরের শক্তি ধরে রাখতে এই পদক্ষেপগুলি সাহায্য করবে।
ডায়রিয়া হলে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে:
প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন:
- ডায়রিয়া হলে পানিশূন্যতা রোধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পানি, ডাবের পানি, চিড়ার পানি, ভাতের মাড়, এবং ফলের রস সবই ভাল কাজ করে।
প্রোটিন এবং শর্করা সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া শুরু করুন:
- ডায়রিয়া হলে শরীরের শক্তি ধরে রাখার জন্য প্রোটিন এবং শর্করা সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। মাছ, মাংস, ডিম, এবং ফল এবং ময়দাযুক্ত খাবার সবই ভাল কাজ করে।
ডায়রিয়া বন্ধ করার জন্য ওষুধ সেবন করুন: ডায়রিয়া বন্ধ করার জন্য কিছু
ওষুধ পাওয়া যায়। তবে, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধগুলি সেবন করা উচিত নয়।
ডায়রিয়া হলে যে খাবার এবং পানীয় এড়িয়ে যাবেন
আঁশযুক্ত খাবার:
- আঁশযুক্ত খাবার অন্ত্রের মধ্য দিয়ে দ্রুত চলে যায় এবং ডায়রিয়াকে আরও খারাপ করতে পারে। কাঁচা সবজি, ফলের খোসা, এবং পুরো শস্য এড়িয়ে চলা উচিত।
ফ্যাটযুক্ত খাবার:
- ফ্যাটযুক্ত খাবার হজম করা কঠিন হতে পারে এবং ডায়রিয়াকে আরও খারাপ করতে পারে। তেল, মাখন, এবং ক্রিমের মতো ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
মশলাযুক্ত খাবার:
- মশলাযুক্ত খাবার অন্ত্রের প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে এবং ডায়রিয়াকে আরও খারাপ করতে পারে। মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
কফি এবং অ্যালকোহল:
- কফি এবং অ্যালকোহল পানি শোষণকে বাধা দেয় এবং পানিশূন্যতাকে আরও খারাপ করতে পারে। কফি এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা উচিত।
ডায়রিয়া সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে নিজেই সেরে যায়। তবে, যদি আপনার ডায়রিয়া
দীর্ঘস্থায়ী হয়, বা যদি এটি পানিশূন্যতা বা অন্যান্য জটিলতা সৃষ্টি করে, তাহলে
আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত
ডায়রিয়া হলে ওষুধ খাওয়া উচিত কিনা তা নির্ভর করে ডায়রিয়ার তীব্রতা এবং
কারণের উপর।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, ডায়রিয়া নিজে থেকেই সেরে যায়। তাই হালকা ডায়রিয়ার জন্য
ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই।
তবে, কিছু ক্ষেত্রে ডায়রিয়া গুরুতর হতে পারে এবং ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে।
ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে যদি:
- ডায়রিয়া তিন দিনের বেশি স্থায়ী হয়।
- ডায়রিয়ার সাথে জ্বর, পেটে তীব্র ব্যথা, রক্ত বা শ্লেষ্মা থাকে।
- আপনি ডিহাইড্রেটেড হন।
ডিহাইড্রেশনের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- বারবার প্রস্রাব কম হওয়া
- গা শুকিয়ে যাওয়া
- মাথা ঘোরা
- চোখ বসে যাওয়া
ডিহাইড্রেশন রোধ করতে:
- প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন।
- স্যালাইন খান।
- ডায়রিয়ার জন্য ORS (Oral Rehydration Solution) খান।
ডায়রিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ওষুধ হল:
- লোপারামাইড: এটি ডায়রিয়ার বারবার টয়লেটে যাওয়ার প্রবণতা কমায়।
- ডিফেনোক্সিলেট: এটি লোপারামাইডের মতো কাজ করে।
- স্মেক্টা: এটি পেটের অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে।
- জিংক: এটি ডায়রিয়ার সময়কাল কমাতে সাহায্য করে।
ডায়রিয়ার ওষুধ খাওয়ার আগে:
- আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
- ওষুধের লেবেলের নির্দেশাবলী সাবধানে পড়ুন।
- পরামর্শিত ডোজের বেশি ওষুধ খাবেন না।
ডায়রিয়া রোধ করতে:
- নিরাপদ খাবার খান।
- হাত সাবান দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
- পরিষ্কার পানি পান করুন।
ডায়রিয়া সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য:
আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট দেখুন।
যে পাঁচটি খাবার ডায়রিয়া হলে এড়িয়ে যাবেন
ডায়রিয়া হলে, পাঁচটি খাবার যা এড়িয়ে চলা উচিত:
১. চর্বিযুক্ত খাবার:
- তৈলাক্ত খাবার
- ভাজা খাবার
- ফাস্ট ফুড
- মাখন
- পূর্ণ চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার
২. মশলাযুক্ত খাবার:
- ঝাল খাবার
- মশলাদার খাবার
- কাঁচা মরিচ
- পেঁয়াজ
- রসুন
৩. আঁশযুক্ত খাবার:
- শাকসবজি
- ফল
- বাদাম
- বীজ
- গোটা শস্য
৪. কাঁচা খাবার:
- কাঁচা শাকসবজি
- কাঁচা ফল
- অপরিপক্ক মাংস
- অপরিপক্ক ডিম
৫. ঠান্ডা পানীয়:
- ঠান্ডা পানি
- ঠান্ডা পানীয়
- বরফ
এই খাবারগুলি ডায়রিয়ার লক্ষণগুলি আরও খারাপ করতে পারে, ডায়রিয়া হলে কি
খাওয়া উচিত নয় যেমন:
- পাতলা পায়খানা
- পেট খারাপ
- বমি বমি ভাব
- বমি
- পেটে ব্যথা
ডায়রিয়ার সময়, নিম্নলিখিত খাবারগুলি খাওয়া উচিত:
হালকা খাবার:
- ভাত
- তরকারি
- ডাল
- সবজি
- মাছ
- মুরগির মাংস
পুষ্টিকর খাবার:
- ডিম
- দই
- কলা
- পেঁপে
পানিশূন্যতা রোধ করার জন্য:
- ওআরএস
- পানি
- স্যুপ
- ফলের রস
ডায়রিয়ার সময়, নিয়মিত হাত ধোয়া এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাও
গুরুত্বপূর্ণ। যদি ডায়রিয়া তীব্র হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে ডাক্তারের
সাথে পরামর্শ করুন।
কি খেলে পাতলা পায়খানা বন্ধ হয়
পাতলা পায়খানা বন্ধ করতে, আপনার খাবারে মনোযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নলিখিত খাবারগুলি পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে:বাতাসযুক্ত খাবার:
- ভাত: সাদা ভাত পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে খুব কার্যকর। এটি হজম করা সহজ এবং এতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকে যা শরীরে শক্তি যোগায়।
- টোস্ট: শুকনো টোস্ট বাতাসযুক্ত খাবার যা পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- আলু: সেদ্ধ বা পোড়া আলু পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- সাদা রুটি: সাদা রুটি বাতাসযুক্ত খাবার যা পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- কাঁচা কলা: কাঁচা কলাতে পেকটিন থাকে যা পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- সেদ্ধ আপেল: আপেলে পেকটিন থাকে যা পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- সাদা মাংস: মুরগির বুকের মাংসের মতো সাদা মাংস পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- খাবার স্যালাইন: পাতলা পায়খানা হলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। খাবার স্যালাইন পানিশূন্যতা রোধ করে এবং পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- চিড়ার পানি: চিড়ার পানিতে প্রচুর পরিমাণে ইলেক্ট্রোলাইট থাকে যা পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- ভাতের মাড়: ভাতের মাড় পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- ডাবের পানি: ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- দই: দইতে প্রোবায়োটিক থাকে যা পাতলা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- আদা: আদা পেটের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।
- পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতা পেটের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।
- প্রচুর তরল পানীয় পান করুন: পাতলা পায়খানা হলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই প্রচুর পরিমাণে তরল পানীয় পান করা গুরুত্বপূর্ণ।
- গরম পানি পান করুন: গরম পানি পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- ছোট ছোট খাবার খান: বারবার ছোট ছোট খাবার খান।
- মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করুন: মসলাযুক্ত খাবার পেটের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
ডায়রিয়া হলে ডিম খাওয়া যাবে
ডায়রিয়া হলে ডিম খাওয়া যাবে, তবে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
ডিম খাওয়ার সময়:
- পরিমাণ: ডায়রিয়ার সময় একবারে একটি ডিম খাওয়া উচিত।
- রান্নার পদ্ধতি: ডিম ভালো করে সিদ্ধ করে বা ভেজে খাওয়া উচিত। কাঁচা বা অর্ধ-সিদ্ধ ডিম খাওয়া উচিত নয়।
- সময়: ডায়রিয়া বন্ধ হওয়ার পরেও কিছুদিন ডিম সাবধানে খাওয়া উচিত।
ডিম খাওয়ার সুবিধা:
- ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে যা দ্রুত হজম হয় এবং শরীরে শক্তি যোগায়।
- ডিমে পানি এবং ইলেক্ট্রোলাইট থাকে যা পাতলা পায়খানার কারণে হওয়া পানিশূন্যতা রোধে সাহায্য করে।
- ডিমে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ডিম খাওয়ার অসুবিধা:
- ডিমে থাকা চর্বি পাতলা পায়খানা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
- ডিমের অ্যালার্জি থাকলে ডিম খাওয়া উচিত নয়।
পরিশেষে, ডায়রিয়া হলে ডিম খাওয়া যাবে, তবে পরিমিত পরিমাণে এবং সাবধানে খাওয়া উচিত। ডিম খাওয়ার পরে যদি পাতলা পায়খানা আরও বেড়ে যায়, তাহলে ডিম খাওয়া বন্ধ করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক আজ আমি ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত বা ডায়রিয়া কেন হয় বা
ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায় কি তা নিয়ে আলোচনা করলাম । পরবর্তীতে
আরো ভালো কিছু টপিক নিয়ে হাজির হব। যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করে দিন।
জমজম আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url