খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম - আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান

ভূমিকা

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক জমজম আইটির পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। আপনি অনেক খোঁজাখুজির পর নিশ্চয়ই খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম বা আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান কি তা জানার জন্যই আমাদের এই সাইটটিতে এসেছেন।
C.S- S.A - RS- BS  খতিয়ান চেনার উপায় - সিএস, এসএ, আরএস, বিআরএস খতিয়ান

হ্যাঁ আজকে আমি সঠিকভাবে খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম বা আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান নিয়ে আলোচনা করব। এই লেখার মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ে ফেলুন।

খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম - আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান

বাংলাদেশের জায়গাজমিন নিয়ে এই পর্যন্ত বেশ কয়েকটি জরিপ হয় যেগুলোকে বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয়েছে । এই পর্যন্ত যতগুলো জরিপি হয়েছে সেগুলো হচ্ছে CS, SA, RS, City, BRS জরিপ খতিয়ান। এই খতিয়ান গুলো জমির মালিকানার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। তাই আমাদের এই খতিয়ানগুলো সম্পর্কে জানতে হবে যে , কোন খতিয়ান কোন সময়ের জরিপে এসেছে। এই খতিয়ানগুলো দেখতে প্রায় একইরকম। 

তাই আমরা সাধারনট চিনতে পারিনা যে কোনটা কোন খতিয়ান। অর্থ কোনটা CS, কোনটা RS, কোনটা BS এই খতিয়ানগুলোকে আলাদা আলাদা করে চিনতে আপনাকে কিছু উপায় বা পদ্ধতি জানতে হবে।  

খতিয়ান হলো জমির মালিকের বিস্তারিত পরিচয় যার মাধ্যমে নিশ্চিত হবে জমির মালিক সম্পর্কে। খতিয়ান কি? , CS, RS, BS, PS খতিয়ান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই পোস্টটি পড়ুন এবং আমাদের সাথে থাকুন। প্রথমে  জেনে নিব খতিয়ান সম্পর্কে কিছু কথা। 

নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান

নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান: একটি বিস্তারিত নির্দেশিকা
নামজারি খতিয়ান হল জমির মালিকানা হস্তান্তরের একটি আনুষ্ঠানিক দলিল। বাংলাদেশে, এই খতিয়ান অনুসন্ধানের জন্য সরকারিভাবে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করা হয়।
অনলাইনে নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধানের পদ্ধতি:
1. e-Khatian ওয়েবসাইট:
  • পদ্ধতি: এই ওয়েবসাইটে আপনি পূর্বের জমির দাগ ও খতিয়ান নম্বর এবং স্থানান্তরিত নতুন খতিয়ান নম্বর দিয়ে অনুসন্ধান করতে পারবেন। এছাড়াও, বিস্তারিত তথ্যের জন্য নতুন মালিকের নাম দিয়েও অনুসন্ধান করা যায়।
2. e-porcha.gov.bd ওয়েবসাইট:
  • পদ্ধতি: এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ট্যাব থেকে নামজারি খতিয়ান সিলেক্ট করুন। এরপরে খতিয়ানের বিভিন্ন তথ্য দিয়ে অনুসন্ধান করুন।
3. ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট:
পদ্ধতি: এখানে আপনি আবেদন আইডি, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ইত্যাদি দিয়ে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারবেন।
4. মোবাইল অ্যাপ:
  • BDRIS Gov BD: এই অ্যাপটি ব্যবহার করেও আপনি মোবাইল দিয়ে সহজেই নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন।
অনুসন্ধানের সময় প্রয়োজনীয় তথ্য:
  • খতিয়ান নম্বর: পুরানো বা নতুন খতিয়ান নম্বর
  • দাগ নম্বর: জমির দাগ নম্বর
  • মালিকের নাম: জমির বর্তমান বা পূর্বের মালিকের নাম
  • আবেদন আইডি: যদি আবেদন করা হয়ে থাকে
  • জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
তথ্যের সঠিকতা: 
  • অনুসন্ধানের সময় সঠিক তথ্য প্রদান করুন। ভুল তথ্য দিলে আপনি সঠিক ফলাফল পাবেন না।
ইন্টারনেট সংযোগ: 
  • অনলাইনে অনুসন্ধানের জন্য স্থিতিশীল ইন্টারনেট সংযোগ থাকা জরুরি।
সহায়তা: 
  • যদি কোন সমস্যা হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের সহায়তা বিভাগে যোগাযোগ করুন।

জমির খতিয়ান অনুসন্ধান

জমির খতিয়ান অনুসন্ধান: একটি বিস্তারিত নির্দেশিকা
জমির খতিয়ান হল আপনার জমির মালিকানার একটি আনুষ্ঠানিক দলিল। বাংলাদেশ সরকার এই খতিয়ানের তথ্য অনলাইনে সহজলভ্য করেছে।
অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধানের পদ্ধতি:
1. e-Khatian ওয়েবসাইট:
পদ্ধতি: এই ওয়েবসাইটে আপনি জমির দাগ নম্বর, খতিয়ান নম্বর, মালিকের নাম ইত্যাদি তথ্য দিয়ে খুঁজতে পারবেন। এটি জমির বিভিন্ন তথ্য যেমন জমির আয়তন, অবস্থান ইত্যাদি দেখতে একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি।
2. e-porcha.gov.bd ওয়েবসাইট:
পদ্ধতি: এই ওয়েবসাইটে আপনি নামজারি খতিয়ান সহ বিভিন্ন ধরনের খতিয়ানের তথ্য খুঁজে পাবেন।
3. ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট:
পদ্ধতি: এখানে আপনি নামজারি আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারবেন।
4. মোবাইল অ্যাপ:
BDRIS Gov BD: এই অ্যাপটি ব্যবহার করেও আপনি মোবাইল দিয়ে সহজেই খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন।
অনুসন্ধানের সময় প্রয়োজনীয় তথ্য:
  • খতিয়ান নম্বর: যদি জানা থাকে
  • দাগ নম্বর: জমির দাগ নম্বর
  • মালিকের নাম: জমির মালিকের নাম
  • আবেদন আইডি: যদি আবেদন করা হয়ে থাকে
  • জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর

খতিয়ান কি - সিএস, এসএ, আরএস, বিআরএস খতিয়ান

  • খতিয়ান হলো জরিপ বিভাগ কর্তৃক সরোজমিনে জমিতে গিয়ে জমির মালিকানা বিবরণ ও নকশা তৈরি করে যে রেকর্ড প্রকাশ করা হয় তাকে সাধারণত খতিয়ান বলে। আরেক ভাষায় খতিয়ানকে আবার “হিসাব” ও বলা হয়ে থাকে। 
  • খতিয়ানগুলো সাধারণত ১,২,৩,৪,৫ নাম্বার দ্বারা ক্রমান্বয়ে সাজানো হয়ে থাকে । অর্থ্যাত প্রতিটি খতিয়ানের একটি নাম্বার থাকে। 
  • খতিয়ান হলো অনেকটা ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নাম্বারের মত। যেরকমটা অ্যাকাউন্ট নাম্বারের মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হন এটা আপনার অ্যাকাউন্ট সেরকম খতিয়ানের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় জমির মালিক সম্পর্কে। 
  • ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নাম্বারের  একজন ব্যক্তির বিস্তারিত পরিচয় যেমনঃ ব্যক্তির নাম, বাবা মায়ের নাম , বর্তমান ঠিকানা, স্থায়ী ঠিকানা ,এনআইডি নাম্বার ইত্যাদি। আর জমির খতিয়ানে থাকে জমির মালিকের বিস্তারিত পরিচয় , জমির অবস্থান, জমির আশে পাশে কি রয়েছে, জমিটি উঁচু নাকি নিচু এসব।
  • এখন জেনে নিই জমির খতিয়ান কত প্রকার ও কি কি। সাধারণত জমির খতিয়ান দুইভাগে বিভক্ত । যথাঃ রেকর্ডীয় খতিয়ান এবং খারিজ খতিয়ান। 
খতিয়ান কি CS, RS, BS, PS খতিয়ান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই পোস্টটি পড়ুন এবং আমাদের সাথে থাকুন। 

খতিয়ান অনুসন্ধান বি এস

খতিয়ান অনুসন্ধান বি এস সম্পর্কে জানুন
খতিয়ান অনুসন্ধান বি এস শব্দগুচ্ছটি সরাসরি কোনো সুনির্দিষ্ট সরকারি সেবা বা ওয়েবসাইটকে নির্দেশ করে না। সম্ভবত আপনি খতিয়ান অনুসন্ধানের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন।
খতিয়ান হল আপনার জমির মালিকানার একটি আনুষ্ঠানিক দলিল। বাংলাদেশ সরকার এই খতিয়ানের তথ্য অনলাইনে সহজলভ্য করেছে।
অনলাইনে খতিয়ান অনুসন্ধানের পদ্ধতি:
e-Khatian ওয়েবসাইট: 
  • এই ওয়েবসাইটটি খতিয়ান অনুসন্ধানের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। এখানে আপনি জমির দাগ নম্বর, খতিয়ান নম্বর, মালিকের নাম ইত্যাদি তথ্য দিয়ে খুঁজতে পারবেন।
e-porcha.gov.bd ওয়েবসাইট: 
  • এই ওয়েবসাইটেও আপনি খতিয়ানের তথ্য খুঁজে পাবেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট: 
  • এখানে নামজারি আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারবেন।
মোবাইল অ্যাপ: BDRIS Gov BD অ্যাপটি ব্যবহার করেও আপনি মোবাইল দিয়ে সহজেই খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন।

রেকর্ডীয় খতিয়ানঃ খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম

রেকর্ডীয় খতিয়ান তৈরি হয় যখন জমিটি একদম প্রথম অবস্থায় অর্থ্যাৎ এর আগে জমিটি কেউ ক্রয় করেনি এরকম জমির যে খতিয়ান তৈরি হয় সেই খতিয়ানকে বলা হয় রেকর্ডীয় খতিয়ান। 

খতিয়ান অনুসন্ধান এস এ

খতিয়ান অনুসন্ধান: বিস্তারিত নির্দেশিকা
  • "খতিয়ান অনুসন্ধান এস এ" এই শব্দগুচ্ছটির সুনির্দিষ্ট অর্থ না থাকলেও, সম্ভবত আপনি জমির খতিয়ান অনলাইনে অনুসন্ধান করার বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন।
  • খতিয়ান হল আপনার জমির মালিকানার একটি আনুষ্ঠানিক দলিল। বাংলাদেশ সরকার এই খতিয়ানের তথ্য অনলাইনে সহজলভ্য করেছে।
অনলাইনে খতিয়ান অনুসন্ধানের পদ্ধতি:
e-Khatian ওয়েবসাইট: 
  • এই ওয়েবসাইটটি খতিয়ান অনুসন্ধানের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। এখানে আপনি জমির দাগ নম্বর, খতিয়ান নম্বর, মালিকের নাম ইত্যাদি তথ্য দিয়ে খুঁজতে পারবেন।
e-porcha.gov.bd ওয়েবসাইট: 
  • এই ওয়েবসাইটেও আপনি খতিয়ানের তথ্য খুঁজে পাবেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট: 
  • এখানে নামজারি আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারবেন।
মোবাইল অ্যাপ: 
  • BDRIS Gov BD অ্যাপটি ব্যবহার করেও আপনি মোবাইল দিয়ে সহজেই খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন।

খারিজ খতিয়ানঃ - সিএস, এসএ, আরএস, বিআরএস খতিয়ান

আর অন্যদিকে খারিজ খতিয়ান তৈরি হয় রেকর্ডীয় খতিয়ান থেকে। এর মানে হচ্ছে রেকর্ডীয় খতিয়ান সম্পন্ন যে জমি অন্য ব্যক্তি ক্রয় করে তখন যে খতিয়ান তৈরি হয় তাকে খারিজ খতিয়ান বলা হয়। 

আরো সহজভাবে খারিজ খতিয়ান চেনার উপায় হলো খারিজ খতিয়ানের নিচে ‘ মন্তব্য’ বলে একটি সেকশন থাকবে যেখানে অবশ্যই লেখা থাকবে ‘ আগত খতিয়ান’  এবং এর সাথে লেখে থাকবে খতিয়ান নাম্বার।  খারিজ খতিয়ান কে আবার নামজারি খতিয়ান ও বলা হয়। 

এখন আমরা জানব আজ পর্যন্ত যতগুলো খতিয়ান তৈরি হয়েছে সেসব নিয়ে। জমির কাগজপত্র সঠিকভাবে চেনাজানা খুব কঠিন কাজ নয়। কিছু বেসিক তথ্য জানা থাকলে যে কেহ জমির কাগজপত্র সম্পর্কে বুঝতে পারবে। 

জমির খতিয়ান সম্পর্কিত প্রাথমিক কিছু ধারণা জেনে নিনঃ

বাংলাদেশে ভূমি জরিপের ইতিহাস অনেক পুরনো। ব্রিটিশ আমলে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের জরিপ করা হয়েছে। এই জরিপের ভিত্তিতে খতিয়ান তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশে প্রচলিত খতিয়ানগুলোর মধ্যে রয়েছে:

C.S খতিয়ান: এই খতিয়ানটি ব্রিটিশ আমলে ১৮৯০-১৯৪০ সালের মধ্যে জরিপ করা হয়েছিল। এই জরিপের সময় জমিদারি প্রথা ছিল। তাই খতিয়ানে জমিদার এবং প্রজার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। C.S খতিয়ানটি দুই পৃষ্ঠার। প্রথম পৃষ্ঠায় জমিদার এবং প্রজার নাম, দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় জমির পরিমাণ, শ্রেণি, খাজনা ইত্যাদি তথ্য রয়েছে।

S.A খতিয়ান: এই খতিয়ানটি পাকিস্তান আমলে ১৯৫৬ সালে জরিপ করা হয়েছিল। এই জরিপের সময় জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হয়েছিল। তাই খতিয়ানে শুধুমাত্র প্রজার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। S.A খতিয়ানটিও দুই পৃষ্ঠার। প্রথম পৃষ্ঠায় প্রজার নাম, দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় জমির পরিমাণ, শ্রেণি, খাজনা ইত্যাদি তথ্য রয়েছে।

R.S খতিয়ান: এই খতিয়ানটি বাংলাদেশ আমলে ১৯৯০ সালে জরিপ করা হয়েছিল। এই জরিপটি C.S এবং S.A খতিয়ানের সমন্বয়ে করা হয়েছিল। R.S খতিয়ানটিতে জমিদার এবং প্রজার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। R.S খতিয়ানটিও দুই পৃষ্ঠার। প্রথম পৃষ্ঠায় জমিদার এবং প্রজার নাম, দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় জমির পরিমাণ, শ্রেণি, খাজনা ইত্যাদি তথ্য রয়েছে।

B.S খতিয়ান: এই খতিয়ানটি R.S খতিয়ানের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। এই খতিয়ানটিতে জমির পরিমাণ, শ্রেণি, খাজনা ইত্যাদি তথ্য রয়েছে। B.S খতিয়ানটি এক পৃষ্ঠার।

C.S- S.A - RS- BS খতিয়ান চেনার উপায়

  • C.S খতিয়ান চেনার উপায়:
  • C.S খতিয়ানটি দুই পৃষ্ঠার।
  • প্রথম পৃষ্ঠায় জমিদার এবং প্রজার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
  • দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় জমির পরিমাণ, শ্রেণি, খাজনা ইত্যাদি তথ্য রয়েছে।

S.A খতিয়ান চেনার উপায়:

  • S.A খতিয়ানটিও দুই পৃষ্ঠার।
  • প্রথম পৃষ্ঠায় প্রজার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
  • দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় জমির পরিমাণ, শ্রেণি, খাজনা ইত্যাদি তথ্য রয়েছে।

R.S খতিয়ান চেনার উপায়:

  • R.S খতিয়ানটিতে জমিদার এবং প্রজার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
  • R.S খতিয়ানটিও দুই পৃষ্ঠার।

B.S খতিয়ান চেনার উপায়:

B.S খতিয়ানটি এক পৃষ্ঠার।
এই খতিয়ানে জমির পরিমাণ, শ্রেণি, খাজনা ইত্যাদি তথ্য রয়েছে।

উপরের উপায়গুলো ছাড়াও, খতিয়ানের উপর লেখা তথ্য দেখেও খতিয়ান চেনা যায়। C.S খতিয়ানে "C.S" লেখা থাকে, S.A খতিয়ানে "S.A" লেখা থাকে, R.S খতিয়ানে "R.S" লেখা থাকে এবং B.S খতিয়ানে "B.S" লেখা থাকে।

C.S খতিয়ান চেনার উপায়ঃ

  • নতুন বা ডিজিটাল সি. এস. খতিয়ানের
  • উপরে বড় করে লেখা থাকে সি. এস. খতিয়ান। খতিয়ান নম্বর ডানে থাকে।
  •  কিন্তু পুরাতন সি. এস. খতিয়ান চিনতে অনেকের অসুবিধে হয় যেহেতু খতিয়ানের কোথাও সি. এস. খতিয়ান কথাটি লিখা থাকে না।
 শুধু ১টি বিষয় মনে রাখলে সি. এস. খতিয়ান চিনতে কখনো ভুল হবে নাঃ

১। দুই পৃষ্ঠার এই খতিয়ানের প্রথম পৃষ্ঠাটি আড়াআড়িভাবে দুই ভাগে বিভক্ত; উপরে জমিদার এবং নিচের অংশে প্রজার নাম থাকবে।

S.A খতিয়ান চেনার উপায়ঃ

শুধু ২টি বিষয় মনে রাখলে এস. এ. খতিয়ান চিনতে কখনো ভুল হবে নাঃ

(১) এই খতিয়ানটি দেখতে এক পৃষ্ঠার ও আড়াআড়ি (Horizontal) হবে।
(২) এই খতিয়ানে সাবেক C.S খতিয়ান এবং হাল নম্বর থাকবে।

হাল নম্বরটি হচ্ছে এস. এ. খতিয়ান নাম্বার।

নোটঃ

পুরাতন ও ডিজিটাল সি.এস এর নমুনা দেখুন।

#RS খতিয়ানঃ যেহেতু SA খতিয়ান সরেজমিনে না গিয়ে জমিদারদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে করা হয়, এতে অনেক ভুল হয় এবং Revisional Survey (R.S) এর মাধ্যমে ভুল সংশোধন করা হয়। আর. এস খতিয়ানের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি।

RS খতিয়ান চেনার উপায়ঃ

 খতিয়ানের একদম উপরে ডানপাশে "রেসার্ভে নং" লেখা থাকলে নিশ্চিতভাবে এটি RS খতিয়ান। কিন্তু রেসার্ভে নং লেখা নাও থাকতে পারে।

এই খতিয়ানটি ১/২ পৃষ্ঠার এবং CS খতিয়ানের মত লম্বালম্বি হবে।
তবে CS এর ১ম পৃষ্ঠা দুই ভাগে বিভক্ত কিন্তু RS খতিয়ানে কোন ভাগ নাই।

BS খতিয়ান চেনার উপায়ঃ

সর্বশেষ ও আধুনিক জরিপ এটি। এ জরিপের পরচা কম্পিউটার প্রিন্ট এ প্রকাশিত হয়।

কোন জরিপ কত সালে হয়

বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের জরিপ করা হয়েছে। এই জরিপের সময়কাল নিম্নরূপ:
  • থাকবস্ত জরিপ: ১৭৯৩-১৮৪৬
  • রাজস্ব জরিপ: ১৮৪৭-১৮৭৮
  • খসড়া জরিপ: ১৮৭৮-১৯৪০
  • সি.এস. জরিপ: ১৮৯০-১৯৪০
  • এস.এ. জরিপ: ১৯৫৬
  • আর.এস. জরিপ: ১৯৯০
  • বি.এস. জরিপ: ২০১০
থাকবস্ত জরিপ: - সিএস, এসএ, আরএস, বিআরএস খতিয়ান
থাকবস্ত জরিপ ছিল জমিদার সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসার জন্য জমিদাররা পরিচালিত একটি জরিপ। এই জরিপের মাধ্যমে জমিদারী এলাকার সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

রাজস্ব জরিপ: - সিএস, এসএ, আরএস, বিআরএস খতিয়ান
রাজস্ব জরিপ ছিল জমিদারী এলাকার আয়তন নির্ণয়ের জন্য পরিচালিত একটি জরিপ। এই জরিপের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ জমিদারী এলাকার বাইরের ভূমিকে খাস ভূমি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং তা কালেক্টরের অধীনে ন্যস্ত করা হয়েছিল।

খসড়া জরিপ: - সিএস, এসএ, আরএস, বিআরএস খতিয়ান
খসড়া জরিপ ছিল থাকবাস্ত জরিপ ও রাজস্ব জরিপ পরিচালনাকালে যেসব ভূমি অস্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত করা হত সেগুলোর জন্য পরিচালিত একটি জরিপ।

সি.এস. জরিপ: - সিএস, এসএ, আরএস, বিআরএস খতিয়ান
সি.এস. জরিপ ছিল ব্রিটিশ আমলে ১৮৯০-১৯৪০ সালের মধ্যে পরিচালিত একটি জরিপ। এই জরিপের মাধ্যমে জমির মালিকানা, সীমানা, আয়তন, শ্রেণি, খাজনা ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল।

এস.এ. জরিপ: C.S- S.A - RS- BS  খতিয়ান চেনার উপায়
এস.এ. জরিপ ছিল পাকিস্তান আমলে ১৯৫৬ সালে পরিচালিত একটি জরিপ। এই জরিপের মাধ্যমে সি.এস. জরিপের পরিবর্তন ও সংশোধনী আনা হয়েছিল।

আর.এস. জরিপ: - সিএস, এসএ, আরএস, বিআরএস খতিয়ান
আর.এস. জরিপ ছিল বাংলাদেশ আমলে ১৯৯০ সালে পরিচালিত একটি জরিপ। এই জরিপটি সি.এস. এবং এস.এ. জরিপের সমন্বয়ে করা হয়েছিল।

বি.এস. জরিপ: C.S- S.A - RS- BS  খতিয়ান চেনার উপায়
বি.এস. জরিপ ছিল আর.এস. জরিপের উপর ভিত্তি করে ২০১০ সালে পরিচালিত একটি জরিপ। এই জরিপটিতে জমির পরিমাণ, শ্রেণি, খাজনা ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল।

খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম

চলুন এখন আমরা খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম জেনে নিই।
অনলাইনে: খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম 
১. ই-পর্চা ওয়েবসাইট:
  • প্রথমে এখানে চাপ দিয়ে ওয়েবসাইটে যান।
  • লগইন করে নিন।
  • "খতিয়ান অনুসন্ধান" মেনুতে ক্লিক করুন।
  • "সার্ভে খতিয়ান" বা "নামজারি খতিয়ান" নির্বাচন করুন।
  • বিভাগ, জেলা, উপজেলা, এবং মৌজা নির্বাচন করুন।
  • খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর, মালিকের নাম, অথবা পিতা/স্বামীর নাম (যেকোন একটি) প্রদান করুন।
  • "অনুসন্ধান" বাটনে ক্লিক করুন।
  • আপনার খতিয়ানের তথ্য দেখা যাবে।
২. সেটেলমেন্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট: খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম 
  • প্রথমে এখানে চাপ দিয়ে ওয়েবসাইটে যান।
  • লগইন করে নিন।
  • "খতিয়ান অনুসন্ধান" ফর্ম পূরণ করুন।
  • "অনুসন্ধান" বাটনে ক্লিক করুন।
  • আপনার খতিয়ানের তথ্য দেখা যাবে।
অফলাইনে: খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম

১. উপজেলা ভূমি অফিস: আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান
  • আপনার এলাকার উপজেলা ভূমি অফিসে যান।
  • "খতিয়ানের অনুলিপি" আবেদনপত্র পূরণ করুন।
  • আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) এর ফটোকপি জমা দিন।
  • আবেদন ফি প্রদান করুন।
  • আপনার খতিয়ানের অনুলিপি পাবেন।
২. মৌজার সার্ভেয়ার: খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম
  • আপনার মৌজার সার্ভেয়ারের সাথে যোগাযোগ করুন।
  • আপনার খতিয়ানের তথ্য জানতে পারবেন।

খতিয়ান অনুসন্ধান করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য

  • বিভাগ
  • জেলা
  • উপজেলা
  • মৌজা
  • খতিয়ান নম্বর (ঐচ্ছিক)
  • দাগ নম্বর (ঐচ্ছিক)
  • মালিকের নাম (ঐচ্ছিক)
  • পিতা/স্বামীর নাম (ঐচ্ছিক)

খতিয়ান অনুসন্ধান করার সুবিধা

  • জমির মালিকানা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
  • জমির খাজনা পরিশোধ করা যায়।
  • জমি বন্ধক রাখা যায়।
  • জমি বিক্রি করা যায়।
উপরে উল্লেখিত নিয়মগুলি পরিবর্তন হতে পারে।
সর্বশেষ তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করুন।

আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান

আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করার জন্য আপনি উপরে উল্লিখিত একই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করতে পারেন: নিচে আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করার জন্য প্রয়োজনীয় অয়েব সাইটের লিংক প্রদান করা হলো।

সেটেলমেন্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট: 
ভূমি অফিসের ওয়েবসাইট: এখানে চাপুন
বিশেষ দ্রষ্টব্য: উপরে উল্লেখিত নিয়মগুলি পরিবর্তন হতে পারে।

উপসংহার:

প্রিয় পাঠক আজ আমরা খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম বা আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান বা সিএস, এসএ, আরএস, বিআরএস খতিয়ান কি এ সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম । যদি এই লেখাটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে শেয়ার করতে ভুলবেন না। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জমজম আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url