শর্করা জাতীয় খাবার এবং এর উপকারিতা কি কি

ভূমিকা

প্রিয় পাঠক আপনি অনেক খোঁজাখুজির পর নিশ্চয়ই শর্করা জাতীয় খাবার এবং এর উপকারিতা কি কি তা জানার জন্যই আমাদের এই সাইটটিতে এসেছেন।
শর্করা জাতীয় খাবার এবং এর উপকারিতা কি কি
হ্যাঁ আজকে আমি সঠিকভাবে শর্করা জাতীয় খাবার এবং এর উপকারিতা কি কি তা নিয়ে আলোচনা করব। এই লেখার মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ে ফেলুন।
শর্করার প্রয়োজনীয়তা প্রতি ব্যক্তির জন্য আলাদা। সাধারণত, একজন প্রাপ্তবয়স্কের প্রতিদিন প্রায় 225 গ্রাম শর্করা প্রয়োজন। তবে, কিছু লোকের, যেমন ডায়াবেটিস রোগীদের, কম শর্করা গ্রহণ করা উচিত।

শর্করা বিভিন্ন খাবারে পাওয়া যায়। ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য, দুগ্ধজাত খাবার এবং ডায়েটেটিক ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারগুলি শর্করার ভাল উত্স। প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলি, যেমন মিষ্টি পানীয়, মিষ্টি এবং বেকারি পণ্য, সাধারণত অতিরিক্ত শর্করাযুক্ত থাকে।

শর্করার একটি স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। শর্করার বেশি পরিমাণে গ্রহণ করলে ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়তে পারে।

শর্করা কি

শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট হল এক ধরনের জৈব রাসায়নিক পদার্থ যার প্রতিটি অণুতে কার্বনের সাথে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন থাকে, যেখানে হাইড্রোজেন পরমাণুর সাথে অক্সিজেন পরমাণুর অনুপাত হয় ২:১। সরল কথায় এটির স্থূল সংকেত হল Cm(H2O)n, যেখানে m এর মান এবং n এর মান ভিন্ন হতে পারে এবং n হল ৩ বা তদূর্ধ্ব সংখ্যা।। কিছু ব্যতিক্রমও অবশ্য আছে, যেমন: ডিঅক্সিরাইবোজ (এটি ডিএনএ তে চিনি হিসেবে থাকে) এর স্থূল সংকেত হল C5H10O4।

শর্করা জাতীয় খাবার এবং এর উপকারিতা কি কি

শর্করা জাতীয় খাবার হল এমন খাবার যাতে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে। শর্করা আমাদের দেহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। এটি আমাদের দেহের প্রধান শক্তির উৎস। এছাড়াও, শর্করা আমাদের দেহের কোষের গঠন, হরমোন এবং নিউরোট্রান্সমিটার তৈরি, এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

শর্করা জাতীয় খাবারের কিছু উপকারিতা হল:

শক্তি সরবরাহ: শর্করা আমাদের দেহের প্রধান শক্তির উৎস। এটি আমাদের পেশী এবং মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে।

কোষের গঠন: শর্করা কোষের প্রাচীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি কোষগুলিকে একসাথে ধরে রাখতে এবং তাদের আকৃতি দেওয়ার জন্য সাহায্য করে।

হরমোন এবং নিউরোট্রান্সমিটার তৈরি: শর্করা হরমোন এবং নিউরোট্রান্সমিটার তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়। এই হরমোন এবং নিউরোট্রান্সমিটার আমাদের দেহের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে জড়িত।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: শর্করা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি সাদা রক্ত ​​কণিকা এবং অ্যান্টিবডি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়।

শর্করা জাতীয় খাবারের কিছু উদাহরণ হল:
  • ফল
  • শাকসবজি
  • গোটা শস্য
  • দুগ্ধজাত খাবার
  • ডায়েটেটিক ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
শর্করার একটি স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। শর্করার বেশি পরিমাণে গ্রহণ করলে ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়তে পারে।

শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণের সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখা উচিত:
  • শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণের পরিমাণ সীমিত রাখুন।
  • প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে দূরে থাকুন।
  • ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য এবং দুগ্ধজাত খাবার থেকে প্রাকৃতিক শর্করা গ্রহণ করুন।
শর্করা জাতীয় খাবার আমাদের দেহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। তবে, এটি একটি স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য বজায় রেখে গ্রহণ করা উচিত।

শর্করার অভাবে কি রোগ হয়

হ্যাঁ, শর্করার অভাবে অনেক রোগ হতে পারে। শর্করার অভাবকে হাইপোগ্লাইসেমিয়াও বলা হয়। এটি তখন ঘটে যখন রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকে। রক্তে শর্করার মাত্রা 70 মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের নিচে নেমে গেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
  • মাথা ঘোরা
  • ক্লান্তি
  • অস্থিরতা
  • ঘাম
  • ঝাপসা দৃষ্টি
  • ক্ষুধা
  • ঝিমুনি
  • কথা বলতে অসুবিধা
  • খিঁচুনি
  • অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার হওয়ার কারণ

  • ডায়াবেটিস
  • ইনসুলিন বা ওরাল অ্যান্টিহাইপারগ্লাইসেমিক ওষুধের অতিরিক্ত মাত্রা
  • খাবারের পরপর অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম
  • দীর্ঘ সময়ের জন্য খাবার না খাওয়া
  • অ্যালকোহল পান করা
  • কিডনি সমস্যা
  • লিভার সমস্যা
  • কিছু ওষুধ
হাইপোগ্লাইসেমিয়ার চিকিৎসার জন্য, আপনাকে অবিলম্বে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ানোর প্রয়োজন। এটি করার একটি উপায় হল চিনি বা ফলের রস খেয়ে। আপনি জলপাই তেল বা ঘি খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। যদি আপনার হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলি গুরুতর হয়, তাহলে আপনাকে অবিলম্বে চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া উচিত।

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার দীর্ঘমেয়াদী জটিলতাগুলির মধ্যে রয়েছে:
  • মস্তিষ্কের ক্ষতি
  • হৃদরোগ
  • কিডনি সমস্যা
  • লিভার সমস্যা
  • মৃত্যু
হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি কমাতে, আপনার ডায়াবেটিস থাকলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। তারা আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।

রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে কি হয়

রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে হাইপারগ্লাইসেমিয়া হয়। এটি তখন ঘটে যখন রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে। রক্তে শর্করার মাত্রা 126 মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের বেশি হলে হাইপারগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।

হাইপারগ্লাইসেমিয়ার চিকিৎসার জন্য, আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা কমানো প্রয়োজন। এটি করার জন্য, আপনি ইনসুলিন বা ওরাল অ্যান্টিহাইপারগ্লাইসেমিক ওষুধ নিতে পারেন। আপনি আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলতে পারেন তারা আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।

ব্লাড সুগার কত থাকা উচিত

ব্লাড সুগার কত থাকা উচিত তা নির্ভর করে ব্যক্তির বয়স, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য বিষয়গুলির উপর। সাধারণভাবে, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য, খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রা (FBS) 80 থেকে 100 মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের মধ্যে থাকা উচিত। খাবার খাওয়ার দুই ঘন্টা পরে রক্তে শর্করার মাত্রা (PPG) 140 মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের বেশি হওয়া উচিত নয়।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য FBS 90 থেকে 130 মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের মধ্যে থাকা উচিত। PPG 180 মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের বেশি হওয়া উচিত নয়।

শিশুদের জন্য, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে। শিশুদের জন্য FBS 80 থেকে 100 মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের মধ্যে থাকা উচিত। PPG 140 মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের বেশি হওয়া উচিত নয়।

উপসংহার:

প্রিয় পাঠক আজ শর্করা জাতীয় খাবার এবং এর উপকারিতা কি কি তা নিয়ে আলোচনা করলাম। আগামীতে অন্য কোন টপিক নিয়ে হাজির হবো। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জমজম আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url